ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস এর জীবনের কিছু তথ্য


ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস এর জীবনের বিস্ময়কর কিছু তথ্য

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনাবসানের সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাজ্যের নতুন রাজা হয়েছেন তার বড় ছেলে প্রিন্স চার্লস। গত ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার, লন্ডনের সেন্ট জেমস প্যালেস রাজকীয় এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজা হিসেবে শপথ গ্রহন করেন প্রিন্স তৃতীয় চার্লস। সেইসাথে তিনিই হলেন আধুনিক সময়ের প্রথম ব্রিটিশ রাজা। এছাড়াও নিয়ম অনুযায়ী চার্লসই এখন ইংল্যান্ড এবং ১৫টি কমনওয়েলথ দেশের রাজা। চলুন জেনে আসা যাক কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ 

রাজা তৃতীয় চার্লস

১৯৪৮ সালের ১৪ নভেম্বর, লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদে ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের প্রত্যাশী, ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপ দম্পতির ঘরে জন্নগ্রহন করেন জ্যেষ্ঠ পুএ চার্লস । 

তার পূর্ণ  নাম চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ । তবে, রাজা হিসেবে তিনি তার চারটি নামের যেকোনো একটি বেছে নিতে পারবেন। 

১৯৪৮ সালের ২২ অক্টোবর প্রিন্স এর জন্নের পূর্বেই, রাজা ষষ্ঠ জর্জের রাজাঙ্গা পত্রের মাধ্যমে ঘোষিত হয়েছিল যে, 

প্রিন্সেস এলিজাবেথ এবং ডিউক অব এডিনবার্গ এর কোন পুএ সন্তান জন্নগ্রহন করলেই রাজকুমার হিসেবে বিবেচিত হবে। সেই সূএে, চার্লস জন্নকালীণ সময় থেকেই প্রিন্সের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। তিনি ব্রিটিশ সিংহাসনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীঘ সময় ধরে যুবরাজ ছিলেন। প্রসঙ্গত, তিনি প্রিন্স অব ওয়েলস হিসেবে এতদিন পরিচিত থাকায়, এই উপাদি এখন যাবে তার বড় ছেলে উইলিয়ামের কাছে। বাকিংহাম প্রাসাদের অভ্যান্তরে গৃহশিক্ষস লাভের মাধ্যমে রাজা চার্লস এর প্রাথমিক সিক্ষা জীবন শুরু হয়।

পরবর্তীতে তিনি লন্ডন, হ্যাম্পশায়ার এবং স্কটল্যান্ডে পড়াশোনা করেন। এরপর ১৯৬৭ সালে, কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে, সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন পর ভর্তি হন  অ্যা বেরিস্টিথ ইউনিভারসিটি কলেজ অব ওয়েলস এ। এছারাও রয়্যাল এয়ারফোরছ কলেজ ও ডার্টমাউথের রয়্যাল নেভাল কলেজেও পড়াশোনা করেন তিনি। ফলশ্রুতিতে বিমান ও নৌবাহিনীতে কাজ ও করেছেন তিনি।

 ১৯৭০ সালের দিকে যুদ্ধজাহাজেও অবস্থান করেন তিনি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৬ মেয়াদকালে, রয়্যাল নেভিতে সফরকালিন দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরবর্তীকালে আধুনিক স্থাপত্যেবিদ্যার সমালোচকের ভূূমিকায় ও দেখা যায় রাজা চার্লসকে।

১৯৮৯ সালে, এ ভিশন অব ব্রিটেন নামক একটি সাময়িকীতে তিনি এ সম্পর্কে তার মতামত তুলে ধরেন।১৯৯২ সালে তিনি প্রিন্স আব ওয়েলস ইনস্টিটিউত অব আর্কিটেকচার নামক একটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। এ প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তীতে শহর পুনর্গঠন ও উন্নয়ন প্রকল্প হিসেবে পরিচিতি বিআরই ট্রাস্টের সাথে একযোগে কাজ করে।

 ১৯৮১ সালে ৩২ বছর বয়সে প্রিন্সেস অব ওয়েলস বিয়ে করেন পৃথিবীর সবচেয়ে খ্যাতিমান মহিলা খ্যাত প্রিন্সেস ডায়নাকে, কিন্তু ১৯৯৬ সালে, তাদের মধ্যে বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়। এই দম্পতির সংসারে প্রিন্স উইলিয়াম, ডিউক অব কেমব্রিজ ও প্রিন্স হ্যারি অব ওয়েলস নামে দুই পুত্র রয়েছে। যদিও এর পরের বছরই ১৯৯৭ সালে, ডায়না ফ্রান্সে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। 

যার কারোনে সাধারন মানুষের তীব্র ঘৃণার স্বীকার হয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৫ সালের, ৯ এপ্রিল প্রিন্স চার্লস ও ডাচেস অব কর্ণওয়ালথ নামে খ্যাত, ক্যামেলিয়া পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

তার মা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ যখন সিংহাসনে বসেন তখন চার্লস এর বয়স ছিল ৩ বছর। স্বাভাবতই দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ইংলেন্ডের সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী ছিলেন চার্লস। তবে তার মা দীর্ঘজীবী হওয়ায় তাকে সিংহাসনে বসতে হয়েছে ৭৩ বছর বয়সে। যদিও চলতি বছর রানি এলিজাবেথ দুর্বল হয়ে পড়ায় চার্লস আগে থেকেই বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নানা ঐতিহ্যগত ও অবিষেক অনুষ্ঠানে রাজ মুকুট পরার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে ব্রিটিশ সম্রাজ্যে চার্লসের শাসন আমন শুরু হলো। 

রাজা হিসেবে শপথ গ্রহনের সময় চার্লস বলেন, তিনি তার কর্তব্য ও সার্বভৌমত্বের গুরুদায়িত্ব সম্পর্কে খুবই সচেতন। জনগনের ভালোবাসা ও আনুগত্যের মধ্য দিয়েই তিনি ক্ষমতায় থাকবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url